রহমত ডেস্ক 02 September, 2022 07:35 PM
সব বাবা-মাই চায়, তার সন্তান নামাজি ও সৎ চরিত্রের অধিকারী হোক। ছোটবেলা থেকেই নীতি-নৈতিকতা ও খোদাভীতি নিয়ে বেড়ে উঠে, সুন্দর পৃথিবী গড়তে ভূমিকা রাখবে আজকের শিশুই। তাই শৈশব থেকেই শিশুদের আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান পালনে অভ্যস্ত করে তোলা উচিত। এসব বিধানের মধ্যে অন্যতম নামাজ। নামাজ মানুষকে অশ্লীলতা থেকে দূরে। আগামী দিনে যে শিশু মানবতার কল্যাণে কাজ করবে, তাকে জীবনের শুরুতেই নামাজে অভ্যস্ত করে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন। [সুরা- আনকাকুত; আয়াত-৪৫] হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ‘তোমরা সন্তানদের নামাজের প্রতি যত্নবান হও এবং তাদের ভালো কাজে অভ্যস্ত করো। কেননা কল্যাণ লাভ অভ্যাসের ব্যাপার।’ [সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ৫০৯৪)
সাত বছরেই নামাজের নির্দেশ : এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও। তাদের বয়স ১০ বছর হওয়ার পর (প্রয়োজনে) নামাজের জন্য প্রহার করো এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও। ’ -(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৯৫) আরেক হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, সন্তান যখন ডান ও বাঁ পার্থক্য করতে শেখে, তখন তাকে নামাজ শেখাও। [মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ৩৫০৪]
শিশুকে নামাজের নির্দেশ দেওয়া এবং তাদের নামাজে অভ্যস্ত করার চেষ্টার সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের প্রশংসা করে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘সে তার পরিবারকে নামাজ ও জাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল আল্লাহর সন্তোষভাজন বান্দা।’ [সুরা মরিয়ম: ৫৫] এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসির রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আল্লাহর আনুগত্যে অবিচলতা ও পরিবারকে নির্দেশ দেওয়ার কারণেই আল্লাহ এই উচ্চতর প্রশংসা করেছেন।’ হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম চাননি তার পরিবারের লাকেরা জাহান্নামে প্রবেশ করুক। এ ব্যাপারে তিনি কোনো ছাড় দেননি। [ইবনে কাসির]
নামাজে অলসতায় জবাবদিহিতা : শিশুকে নামাজে অভ্যস্ত করে তোলার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে সে ঠিকমতো নামাজ পড়ছে কি না। আর নামাজে অলসতা করলে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আমার খালা মায়মুনার কাছে রাতে অবস্থান করছিলাম। সন্ধ্যার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে জিজ্ঞেস করলেন, এই শিশু কি নামাজ পড়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ।’ [সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৩৫৬]